বাঙালির চিরকালের নায়ক হলেন মহানায়ক উত্তম কুমার। তার অবদান বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জগতে অপূরণীয়। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এত বছর পরেও তাকে ভোলেননি কেউই ।অনেক স্ট্রাগল করে তিনি এই জায়গাতে এসেছেন। পর পর প্রায় 7-8 টি ছবি তার ফ্লপ হয়েছিল। তারপরে যখন তিনি প্রায় আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন সেই সময়ে তার ছবিগুলো সুপারহিট হতে শুরু করে এবং তার পরে তার ক্যারিয়ার জীবনের চরম সাফল্য আসে।
তবে এই ক্যারিয়ার এবং নিজের জীবন ছেড়ে খুব তাড়াতাড়ি তিনি বিদায় নেন তিনি। ফলে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অপূরণীয় ক্ষতি হয়। ওগো বধূ সুন্দরী সিনেমার শুটিংয়ের সময় ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে তিনি মারা যান ।তবে শুটিংয়ের দিনটি কেমন ছিল এটি জানার আগ্রহ রয়েছে অনেকেই।
সেদিন প্রথম থেকে উত্তম কুমারের মন খুব একটা ভালো ছিল না ।কারণ তখন সুপ্রিয়া দেবী হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ফলে তার মন খারাপ থাকারই কথা। তার পছন্দের টেপ রেকর্ডার সেদিন হারিয়ে যায় ।অনেক খুজেও তিনি সেটি পাননি। যার মধ্যে ছিল অনেক স্মৃতি। সব মিলিয়ে উত্তম কুমারের মেজাজ খুব একটা ভালো ছিল না ঠিকই কিন্তু তার শুটিং এর মাধ্যমে সেটা বোঝার একেবারেই উপায় নেই । একেই বলে প্রকৃত অভিনেতা ।
তিনি তখন ওগো বধূ সুন্দরী সিনেমার শুটিং করছিলেন। তার বিপরীতে অভিনেত্রী হিসেবে ছিলেন সুমিত্রা মুখোপাধ্যায়। তার স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করছিলেন তিনি। শেষ দৃশ্য দেখা যায় যে তার স্ত্রী রাগ করে বাপের বাড়ি চলে যাচ্ছেন। তখন দাড়ি কামাতে কামাতে উত্তম কুমার তার স্ত্রীকে বাধা দেবার চেষ্টা করেন এবং শেষের দিকে গলা চড়িয়ে ফেলেন। তবে এই দৃশ্যটি পুরোটা শেষ করে উঠতে পারেন না তিনি। তার আগেই বুকে হাত দিয়ে ওঠেন তিনি এবং তখনই তার হার্ট এটাক শুরু হয় । এরপর তাকে বেলভিউ নার্সিং হোমে নিয়ে যাওয়া হয়। তবুও তাকে বাঁচানো যায়না।
তবে সেই সেই দৃশ্যের অভিনয় দেখলে এখনো পর্যন্ত কেউ বলবে না যে সেই মুহূর্তে উত্তম কুমারের কতটা অস্বস্তি বোধ হচ্ছিল ।কারণ তিনি একজন প্রকৃত অভিনেতা ।তাই অসুস্থতা সত্ত্বেও জীবনের শেষ পরিণতিতে এসেও অভিনয়কেই জীবন সমর্পণ করেছেন তিনি।